আপনারা মূল্যবান পাঠক। এই প্রতিবেদনে আপনাদের কাছেই একটি প্রশ্ন করছি আমরা। আচ্ছা বাংলার শিক্ষা ক্ষেত্রে এই কেলেঙ্কারি এবং একের পর এক গোলযোগ কি কখনও শেষ হবার নয়?
কোথায় আমরা আপনাদের খবর জানাব তার বদলে পাল্টা এই প্রশ্ন করা নিয়ে মনে সংশয় দেখা দিতেই পারে। কিন্তু দেখুন, ব্যাপক দুর্নীতির কারণে কলকাতা হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই এসএসসির ২০১৬ সালের গোটা প্যানেলটাই বাতিল করে দিয়েছে। এর ফলে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীর চাকরি চলে গিয়েছে।
সকলেই যে দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পেয়েছিলেন তেমনটা নয়। অনেকেই যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে চাকরি করছিলেন। কিন্তু ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম হওয়ার কারণে যোগ্য শিক্ষকদেরকেও আজ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হল। এই ঘটনার রেশ সহজে মিলিয়ে যাওয়ার নয়।
কিন্তু এরই মধ্যে খবর এল প্রাথমিকের টেট পরীক্ষায় একটা-দুটো নয়, একেবারে ২১ টা ভুল প্রশ্ন থাকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বড় পদক্ষেপ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
আরো পড়ুনঃ রাজ্যে এক ধাক্কায় ২৫,৭৫৩ চাকরি বাতিল! গরমের ছুটির পর স্কুলে কারা ক্লাস নেবে?
বিষয়টা খোলসা করে বলা যাক। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ মামলা দায়ের করে জানান, ২০১৭ সালের প্রাথমিকের টেট পরীক্ষায় ২১ টি প্রশ্ন ভুল ছিল। তাঁরা এই ভুল প্রশ্নগুলোয় সম্পূর্ণ নম্বর দেওয়ার দাবি তোলেন।
এরপরে বিচারপতি মান্থা বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে প্রশ্নপত্রে আদৌ ভুল কিছু ছিল কিনা সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। তবে সূত্রের খবর, ভুল প্রশ্নের সংখ্যা দু-চারটে এদিক ওদিক হলেও ওই পরীক্ষায় যে বেশ কিছু প্রশ্ন গোলমেলে ছিল তা বেশিরভাগ পরীক্ষার্থীই টের পেয়েছিলেন।
তবে শুধু বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েই থেমে থাকেননি বিচারপতি মান্থা। তিনি জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্রে যদি সত্যিই ভুল থেকে থাকে তবে ভুল প্রশ্ন পিছু পূর্ণ নম্বর টেট পরীক্ষার্থীদের দিতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। শেষ পর্যন্ত যদি প্রশ্নপত্রে ভুল বেরোয় এবং বিচারপতির এই নির্দেশ কার্যকরী হয় তবে ২০১৭ সালের প্রাথমিকে টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে যে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে সেখানেও মেধা তালিকায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা থাকছে।
আরো পড়ুনঃ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার আর পাবেন না! মুখ্যমন্ত্রী কেন বললেন এই কথা?
সে ক্ষেত্রে আবারও বেশ কিছু শিক্ষকের চাকরি নিয়ে টানাটানি শুরু হতে পারে। এই বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মাত্র একদিন সময় দিয়েছেন বিচারপতি। পাশাপাশি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ১১ জুন।