বর্তমানে ভারতের সর্বোচ্চ মূল্যের কারেন্সি হল ৫০০ টাকার নোট। ২০০০ টাকার নোট বাতিলের পর থেকে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই সরকার উচ্চমূল্যের নোট চালু করার কথা ভাবছে বলে বিভিন্ন জায়গায় খবর ছড়াচ্ছে।
সম্প্রীতি সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ছড়িয়েছে যে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক ৫০০০ টাকার নোট আনতে চলেছে। তবে এর পিছনে আসল সত্যি কি রয়েছে?
৫০০০ টাকার নোটের অতীতের ঝলক
অনেকে জানেন না যে, স্বাধীনতার পর ভারতে ৫০০০ টাকা এবং ১০০০০ টাকার নোট প্রচলিত ছিল। ১৯৫৪ সালে এই নোট চালু করা হয় এবং ১৯৭৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই এই নোটগুলি বাজেয়াপ্ত করে দেন। এরপর থেকে ভারতে উচ্চমূলের নোট হিসেবে ১০০০ টাকা এবং ২০০০ টাকার টাকার নোট চালু করা হয়। কিন্তু তাও পরবর্তী সময় বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ার গুজব
সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা চলছে যে, ভারত সরকার খুব শিগগিরই ৫০০০ টাকার নোট চালু করবে। ২০০০ টাকার নোট প্রত্যাহারের পর এই গুজব আরো জোরালো হয়েছে। তবে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের তরফে এই বিষয়ে স্পষ্টভাবে কোন সিদ্ধান্ত এখনো গ্রহণ করা হয়নি।
RBI-এর বক্তব্য
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া স্পষ্ট করেছে যে, ৫০০০ টাকার নোট চালু করার কোন পরিকল্পনা আপাতত গ্রহণ করা হয়নি। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের মতে বর্তমানে প্রচলিত ৫০ টাকা, ১০০ টাকা, ২০০ টাকা এবং ৫০০ টাকার নোটই দেশের অর্থনীতির প্রয়োজন মেটাতে যথেষ্ট। এছাড়াও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসারনের ফলে নগত টাকার ব্যবহার ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।
ডিজিটাল পেমেন্টের গুরুত্ব
UPI, ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং ডিজিটাল ওয়ালেটের ব্যবহার বাড়ার জন্য কারেন্সি নোটের প্রয়োজনীয়তা অনেকটাই কমে গিয়েছে। করোনা মহামারীর সময় ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার দ্রুত বৃদ্ধি পায়। বড় মূল্যের নোট চালু করার পরিবর্তে ভারত সরকার ডিজিটাল অর্থনীতির দিকে জোর দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: WBPSC ফুড প্রসেসিং অফিসার নিয়োগ: রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের জন্য ২০২৫ সালে বড় সুখবর
জনগণের প্রতি সতর্কতা
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক জনগণকে সতর্ক করে বলেছে, কোন গুজবে কান না দিয়ে শুধুমাত্র সরকারি সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে বিশ্বাস করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে, যা জনগণকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।
বর্তমানে ৫০০০ টাকার নোট চালু করার কোন রকম পরিকল্পনা নেই বলেই ভারতীয় ডিজার্ভ ব্যাংক স্পষ্ট করেছে। পরিবর্তে ভারত সরকার এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক ডিজিটাল অর্থনীতিকে প্রসারিত করার উপর জোর দিচ্ছে। তাই সোশ্যাল মিডিয়ার গুজবে বিশ্বাস করার আগে সরকারি বিবৃতি যাচাই করে নেওয়া উচিত।