এক দেশ এক আধার কার্ড এই নিয়ম তো অনেকদিন ধরেই চালু হয়েছে। ভারতবর্ষে থাকতে গেলে আধার কার্ড ভীষণভাবে জরুরী, এখন আমাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুর সাথেই আধার লিঙ্ক হয়ে গেছে।
কিন্তু এখনো মাঝেমধ্যে আধার বিতর্ক আধারেই রয়ে যায় আধার কার্ড ই কি ভারতের নাগরিকত্ব বা বাসস্থানের প্রমাণপত্র? – এই প্রশ্ন এখনো ভাবায় মানুষকে। কারণ এই নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন উঠেছে।
তবে এইবার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিলো ইউনিক আইডেনটিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (UIDAI)। তাদের তরফ থেকে দেওয়া একটি বিবৃতিতে তারা কলকাতা হাইকোর্টে বৃহস্পতিবার বলেছে যে, আধার নম্বর নাগরিকত্ব বা বাসস্থানের প্রমাণপত্র নয়।
এই কথা ইউআইডিএআইয়ের আইনজীবী কলকাতা হাইকোর্টে নিজের মুখে বলেছেন। আইনজীবী লক্ষ্মী গুপ্তা এই প্রসঙ্গে একটি বিবৃতিতে বলেন যে, আধার কার্ড সেই সকল নাগরিকদের দেওয়া হয়, যারা এই দেশে টানা ১৮২দিন বাস করছেন, এটি দেওয়া হয় তারা যাতে সরকারি ভর্তুকি পেতে পারেন। এ ছাড়া জয়েন্ট ফোরামের তরফে এনআরসির বিরুদ্ধে একটি পিটিশন দাখিল করা হয়, সেখানে বলা হয় যে, আধার অ্যাক্ট ২০২৩এর ২৮এ বাতিল করা হয়েছে,তবে আইনজীবী বলেছেন যে, UIDAI আধার কার্ড কে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে সেই ক্ষেত্রে যখন দেখা যাবে যে, কোনও বিদেশি ব্যক্তি ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরেও এই দেশে অতিরিক্তভাবে থেকে যাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আধার কার্ডের বাতিল হওয়া নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়, তাই নিয়েই জানতে চায় জয়েন্ট ফোরাম। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চে এই নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা শুরু করেন জয়েন্ট ফোরামে।
ফোরামের আইনজীবী ঝুমা সেন আধার কার্ডের এই বিভ্রান্তি প্রসঙ্গে বলেন যে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বক্তব্যের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের ধন্ধ তৈরি হয়ে যায় ও নানা ধরনের বৈপরীত্য সৃষ্টি হয়। সিএমও থেকে এই নিয়ে চিঠি পিএমওতে ও পাঠানো হয়েছে।
UIDAI প্রাথমিকভাবে এই প্রসঙ্গে নিজেদের মত প্রকাশ করে বলেন যে, এটা একটা টেকনিক্যাল এরর। আধার কর্তৃপক্ষের তরফে এই প্রসঙ্গে বলা হয় যে, এই পিটিশনটা নিয়ে শুনানি করা ঠিক নয় কারণ এখানে যে সকল মানুষদের সম্পর্কে বলা হচ্ছে তারা ভারতের নাগরিকই নন। আধার কর্তৃপক্ষ পাসপোর্ট অথরিটি বা ফরেনার্স অ্যাক্ট নিয়ে যারা কাজকর্ম করে থাকেন, তাদের থেকে তথ্য নিতে পারেন।
আরো পড়ুন: ২ মাস কোনো চিন্তা নেই, এই প্রকল্পে ১০ হাজার টাকা দেবে রাজ্য সরকার
উল্লেখ্য, ফোরামের পক্ষের আইনজীবী এই আধার বিতর্কে বলেন যে, এই বিষয়টা হলো পেছন দরজা দিয়ে এনআরসিকে লাগু করার মতো। সেই সাথে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের একটি অর্ডারের প্রসঙ্গ তুলে বলেন যে, কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ একবার ঠিক এই রকমই আধার বাতিল করার ব্যাপার নিয়ে স্থগিতাদেশ দিয়ে ছিলো।
এ এসজি অশোক কুমার চক্রবর্তী তখন বলেন যে, এই জনস্বার্থ মামলাটি চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় না, কারণ এই পিটিশনে আধার অ্যাক্টের ৫৪ ধারাকে চ্যালেঞ্জ করা হয় নি। সেই সাথে অশোক কুমার চক্রবর্তী আরও জানিয়ে দেন যে, এইভাবে কোনও দেশের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করা চলে না।