বিদ্যুতের বিল দেখেই মাথায় হাত। যেখানে মাসে আগে দুই-তিন হাজার টাকা বিল আসতো, সেখানে এক লাফে ১২ হাজার টাকা বিল আসলো। হ্যাঁ, হুগলির ব্যান্ডেলের এক সাধারণ পরিবারের এখন দিশেহারা অবস্থা। বরং, এরকম প্রতারণা শিকার হয়েছে আরো বহু মানুষ। তবে অভিযোগ একটাই- স্মার্ট মিটার (Smart Meter)। আর এই ক্রমবর্ধমান অভিযোগের ভিত্তিতে নবান্ন বিরাট সিদ্ধান্ত নিল।
স্মার্ট মিটার নিয়ে উত্তাল গোটা রাজ্য
জানিয়ে রাখি, গত কয়েক মাসে বিভিন্ন জেলায় বারবার স্মার্ট মিটার নিয়ে উঠে এসেছে অভিযোগ। কেউ কেউ বলছে, জোর করে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে আগের থেকে অনেক বেশি পরিমাণে বিল আসছে। এমনকি নিয়মিত কারিগরি ত্রুটি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সবথেকে বড় প্রশ্ন উঠছিল সাধারণ মানুষের গোপনীয়তা এবং স্বচ্ছতা নিয়ে।
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ
সূত্রের খবর, বারাসাতের চাপাডালি মোড়ের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্মার্ট মিটার নিয়ে তীব্র বিতর্কের জন্ম নিয়েছে। হ্যাঁ, সেই অভিযোগ পৌঁছে যায় সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে। এরপর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের বিদ্যুৎ দপ্তরের তরফে নোটিশ জারি করা হয়। আর সেখানে জানানো হয়েছে, ডোমেস্টিক বা গৃহস্থালীর ক্ষেত্রে আর বাধ্যতামূলক স্মার্ট মিটার বসানো যাবে না।
পরিসংখ্যান কী বলছে?
বিদ্যুৎ দপ্তরের সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা বাংলায় এখনো পর্যন্ত ১ লক্ষ ৬০ হাজার স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে। আর এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ গৃহস্থলীতে এবং বাকি ৩৫ শতাংশ বাণিজ্যিক ও শিল্পক্ষেত্রে বসানো হয়েছে। তবে নয়া নির্দেশ অনুসারে, গৃহস্থালীর ক্ষেত্রে আগের মতো আর বাড়তি বিলের আশঙ্কা থাকছে না।
আরও পড়ুন: ২৭ জুনের মধ্যে বকেয়া ডিএ না দিলেই…হুঁশিয়ারি রাজ্যের সরকারি কর্মীদের
সবথেকে বড় ব্যাপার, যে সমস্ত গৃহস্থলীতে ইতিমধ্যে স্মার্ট মিটার বসানো হয়েছে, সেখান থেকে তা খুলে আবার পুরনো মিটার বসিয়ে দেওয়া হবে। আর এই সিদ্ধান্তে এক দিকে যেমন সাধারণ গ্রাহকরা স্বস্তি পেয়েছে, অন্যদিকে রাজ্য সরকারের প্রতিও ভরসা জন্মেছে।
তবে জানিয়ে রাখি, নবান্ন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এবং শিল্প ক্ষেত্রগুলিতে এই স্মার্ট মিটার প্রকল্প বজায় থাকবে। এখানে এই মিটার লাগানো হবে বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং পর্যবেক্ষণ করার জন্যই। শুধুমাত্র গৃহস্থলীতে এই মিটার বসানো হবে না।