মাধ্যমিক পরীক্ষা পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার আর মাত্র ১ মাসও বাকি নেই। এই সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীরা জোর কদমে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত রয়েছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এই পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
এবছর পরীক্ষায় স্বচ্ছতা বাড়াতে এবং নম্বর নির্ধারণে আরও নির্ভুলতা আনার জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নতুন নিয়ম চালু করছে। পরীক্ষায় খাতা দেখার প্রথাগত নিয়মে পরিবর্তন আনতে পরীক্ষকদের জন্য একটি বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
খাতা দেখার নিয়মে কী পরিবর্তন হচ্ছে?
বর্তমানে মাধ্যমিক পরীক্ষায় খাতা দেখার সময় পরীক্ষকেরা লাল কালির পেন দিয়ে প্রতিটি উত্তরের পাশে নাম্বার লেখেন। খাতার শুরুতে এবং শেষে পরীক্ষার্থীর মোট প্রাপ্ত নাম্বার উল্লেখ করে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশ্নের উত্তর আগে পরে দেওয়ার কারণে বা কালির অস্পষ্টতার কারণে নম্বর গণনায় বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়।
এর ফলে যে সমস্যাগুলি দেখা যায় সেগুলি হল-
- পরীক্ষার্থীর ফল প্রকাশের পর রিভিউ বা স্ক্রুটিনির সময় নাম্বার কমে যায় বা বেড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
- নম্বর নির্ধারণের ক্ষেত্রে পরীক্ষক এবং পরীক্ষার্থীর মধ্যে আইনি জটিলতা দেখা যায়।
নতুন নিয়মে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ?
পর্ষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এবার থেকে পরীক্ষকদের প্রতিটি খাতার জন্য আলাদা একটি কেজিং সিট দেওয়া হবে। সেই কেজিং শিটের মাধ্যমে-
- পরীক্ষক খাতার প্রতিটি উত্তরের নাম্বার কেজিং শিটে লিপিবদ্ধ করবেন।
- সমস্ত কেজিং শীট পরে প্রধান পরীক্ষকের কাছে জমা দিতে হবে।
- পরীক্ষার্থীর মোট নাম্বার খাতার পাশাপাশি কেজিং শিটেও লেখা থাকবে।
এই পদ্ধতিতে মাধ্যমে যে সুবিধাগুলি পাওয়া যাবে সেগুলি হল-
- নম্বর নির্ধারণের স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।
- রিভিউ এবং স্ক্রুটিনির সময় নাম্বার গণনার ক্ষেত্রে নির্ভুলতা খুব সহজে নিশ্চিত করা যাবে।
- পরীক্ষার্থী এবং পরীক্ষকের মধ্যে আইনি জটিলতা এড়ানো যাবে।
আরও পড়ুন: নতুন প্যান কার্ড ২.০ কীভাবে পাবেন? পুরনো প্যান কার্ড বাতিল হয়ে যাবে, বিস্তারিত জানুন
শিক্ষকদের প্রতিক্রিয়া
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষক মহলে মতভেদ দেখা গেছে। অনেকে মনে করছে এই পদ্ধতি পরীক্ষায় স্বচ্ছতা বাড়াবে এবং পরীক্ষার্থীরা সুবিচার পাবে। কিন্তু কিছু শিক্ষক মনে করছেন যে, এই নিয়ম পরীক্ষকদের উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে।
যোধপুর পার্ক গার্লস হাইস্কুলের সহ প্রধান শিক্ষিকা অজন্তা চৌধুরী বলেছেন, নতুন পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা বাড়বে ঠিকই। তবে পরীক্ষকদের কাজের চাপও বাড়বে। এই বিষয়টি পর্ষদের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।
মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা দেখার ক্ষেত্রে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এই নতুন নিয়ম পরীক্ষার পদ্ধতিকে আরও স্বচ্ছ এবং উন্নত করবে তা আশা করা যায়। যদিও পরীক্ষকদের কাজের চাপ বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে এই নিয়ম পরীক্ষার্থী এবং পরীক্ষক উভয়কেই সাহায্য করবে।