প্রযুক্তির দৌলতে এবার চাকরি হারাতে বসেছে পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার মিটার রিডার কর্মী। রাজ্যের ঘরে ঘরে এবার WBSEDCL প্রিপেইড স্মার্ট মিটার (Smart Meter) বসতে চলেছে। আর এতে একদিকে যেমন বিদ্যুৎ গ্রাহকদের জন্য নতুন প্রযুক্তির দরজা খুলে যাচ্ছে, অন্যদিকে মিটার রিডারদের চাকরি হারানোর আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে।
স্মার্ট মিটার আসলে কী?
স্মার্ট মিটার হলো আধুনিক ডিজিটাল ইলেকট্রিসিটি মিটার, যা খরচ রেকর্ড করে রাখে। এরপর সেই তথ্য সরাসরি বিদ্যুৎ দপ্তরের সার্ভারে পাঠিয়ে দেয়। আর এতে একদিকে যেমন গ্রাহকরা নিজেদের খরচ দেখতে পায়, অন্যদিকে বিদ্যুৎ অফিস দূর থেকেই মিটার বন্ধ বা চালু করতে পারে।
মিটারগুলোতে থাকবে একটা সিম কার্ড, যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত থেকে বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলি সার্ভারে ডেটা পাঠিয়ে দেবে। আর আগাম যদি টাকা না ভরা হয়, তাহলে সেই মিটার বন্ধ করে দেওয়া হয়। যদিও এক্ষেত্রে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যাকআপ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে, যা পরে পরিশোধ করা যায়।
প্রযুক্তির জেরে আতঙ্কে মিটার রিডাররা
এই সুবিধা যতই নজরকাড়া হোক না কেন, বাস্তবে এক বড় শ্রেণীর মানুষের জীবিকা সংকটের মুখে পড়েছে। যারা এতদিন মিটার রিডিং এর জন্য বাড়ি বাড়ি গেছে, তারা এখন ভাবছে, যদি যন্ত্রই আমাদের কাজ করে দেয়, তাহলে আমরা কি করব।
কলকাতা সহ আশেপাশের জেলাগুলিতে এখন বহু ঠিকাদারি সংস্থার অধীনে কাজ করে এরকম হাজার হাজার কর্মী। আর তারা অভিযোগ তুলছে, স্মার্ট মিটার চালু হওয়ায় তাদের কাজে লাগানো হচ্ছে না। এমনকি কোনও বিকল্প কাজও দেওয়া হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: প্যান কার্ড বা আধার কার্ড দেখিয়ে আর কাজ হবে না! নতুন নির্দেশিকা জারি করল সরকার
কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা কী বলছে?
এ প্রসঙ্গে WBSEDCL এর কন্ট্রাক্ট ওয়ার্কম্যান ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক গোপাল বিশ্বাস জানিয়েছেন, আমাদের প্রায় ১৫ হাজার কর্মীর এক ধাক্কায় চাকরি চলে যেতে পারে। তাই আমরা আন্দোলনের পথে হাঁটার কথা ভাবছি। আর এ মুহূর্তে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ জোরকদমে চলছে। এমনকি গ্রাম বা শহরতলীর বিভিন্ন অংশেও লাগানো হচ্ছে স্মার্ট মিটার।
যদিও বিরোধীদের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, বিদ্যুৎ আইনের অধীনে কেউ চাইলে স্মার্ট মিটার নাও নিতে পারে। অথচ রাজ্য সরকার জোর করে মিটার বসিয়ে দিচ্ছে। যার ফলে শুধু কর্মহানী নয়, বরং দৈনন্দিন জীবিকার ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা যাচ্ছে।