রাজ্যের বহু জেলায় আলোচনার বিষয় স্মার্ট মিটার বা প্রিপেইড ইলেকট্রিক মিটার (Smart Meter)। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিষেবায় গতি আনার উদ্দেশ্যে চালু করা হয়েছিল এই মিটার। এবার সেই প্রযুক্তিই সাধারণ মানুষের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। হ্যাঁ একদম ঠিকই পড়েছেন।
আসলে সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বিদ্যুৎ গ্রাহকরা অভিযোগ তুলছেন, তাদের অনুমতি ছাড়াই এই স্মার্ট মিটার বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে হঠাৎ করেই বিদ্যুতের বিল অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, এই মিটারের কারণে তারা নিজের ব্যক্তিগত তথ্যের উপর নজরদারির শিকার হচ্ছেন।
স্মার্ট মিটার আসলে কী?
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, স্মার্ট মিটার একটি আধুনিক ইলেকট্রিক মিটার, যা রিমোট প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতি ঘন্টায় বিদ্যুৎ খরচের তথ্য বিদ্যুৎ দপ্তরের কাছে পাঠিয়ে দেবে। আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, এটি প্রিপেইড মডেলে কাজ করবে। অর্থাৎ, আগে টাকা রিচার্জ করতে হবে। তবেই মিলবে বিদ্যুৎ পরিষেবা।
এক কথায়, মোবাইলে যেমন টাকা না ভরলে ফোন করা যায় না বা নেট চলে না, ঠিক সেরকমই স্মার্ট মিটারে টাকা না থাকলে পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাবে। আর এই ব্যবস্থা চালু করার পিছনে উদ্দেশ্য হলো, গ্রাহকরা নিজেদের খরচ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন এই মিটারের মাধ্যমে।
গ্রাহকদের অভিজ্ঞতা কী বলছে?
উত্তর ২৪ পরগণা, নদীয়া, বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, মালদা সহ বিভিন্ন জেলায় অভিযোগ উঠছে যে, গ্রাহকদের অনুমতি না নিয়েই তাদের বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রেই মিটার বদল করার আগে কোনো রকম নোটিশ দেওয়া হচ্ছে না।
আবার অনেকে দাবি করছে, আগে যেখানে মাসে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বিদ্যুতের বিল আসতো, এবার স্মার্ট মিটার বসানোর পর থেকে সেই বিল বেড়ে ৯০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ই-শ্রম কার্ড থাকলেই মিলছে মাসে ৩০০০ টাকা! কীভাবে পাবেন দেখে নিন
বিদ্যুৎ দপ্তর কী বলছে?
এদিকে বিদ্যুৎ দপ্তরের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আমরা রাজ্যের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে ডিজিটাল করতে চাইছি। স্মার্ট মিটার না বসালে এই প্রক্রিয়া কোনদিন সম্ভব হবে না। তবে ওই কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন যে, গ্রাহকদের সঙ্গে আলোচনার কিছুটা ঘাটতি হয়েছে এবং বিদ্যুৎ বিল বাড়ার বিষয়টি সত্যিই তদন্ত সাপেক্ষ।
তবে এই স্মার্ট মিটার নিয়ে বিতর্ক থামবে না বলেই বেশ কিছু বিশেষভাবে মনে করছে। কারণ, এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতের জন্য যেমন ইতিবাচক পদক্ষেপ, তেমনই সাধারণ মানুষের মাথা ব্যথার কারণও হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এখন দেখার ভবিষ্যতে কি হয়।