দেশের রেশন ব্যবস্থা (Ration System) আবার বদলে যাচ্ছে। গ্রাহকদের হাতে চাল আটার বদলে সরাসরি টাকা আসবে। হ্যাঁ, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। আর এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রেশন ডিলার থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে। কারণ দিল্লিকে কেন্দ্র করে এবার বড়সড় রেশন সংস্কারের পথে হাঁটছে কেন্দ্র। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এবার জোরদার আন্দোলনে রাস্তায় নামার প্রস্তুতি দিয়েছে রেশন ডিলাররা।
নগদে রেশন দেওয়ার পথে কেন্দ্র সরকার
কেন্দ্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এবার থেকে চাল আটা দেওয়ার বদলে গ্রাহকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দেওয়া হবে। এই উদ্যোগ প্রথমে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে চালু করা হবে এবং পরে ধাপে ধাপে প্রত্যেকটি রাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
এই ব্যবস্থায় পাইলট প্রযুক্তি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে চন্ডিপুর, পুদুচেরি এবং লাক্ষাদ্বীপের মতো অঞ্চলে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই দিল্লিতে উচ্চপর্যায়ের আধিকারিকদের মধ্যে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এমনকি আধিকারিকদের এই নতুন ব্যবস্থা নিয়ে প্রশিক্ষণের কথাও জানানো হয়েছে।
রেশন ডিলারদের আশঙ্কা
এই পরিকল্পনায় সব থেকে বেশি চিন্তার কবলে পড়েছেন রেশন ডিলাররা। তাদের আশঙ্কা, এই নতুন রেশন ব্যবস্থায় তাদের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়বে। এই পরিস্থিতি ঠেকাতে ‘অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন’ জানিয়েছে, তারা দেশজুড়ে একাধিক কর্মসূচি এবং আন্দোলনে নামবেন। তাদের দাবি একটাই, পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ুর মডেল চালু করা হবে গোটা দেশে।
বাংলা ও তামিলনাড়ু মডেল কী?
বাংলা মডেল হল সবার জন্য রেশন ব্যবস্থা। যার ফলে প্রত্যেক নাগরিক স্বল্পমূল্যে খাদ্য সামগ্রী পান। আর তামিলনাড়ু মডেলে রেশন ডিলারদের সরকারি কর্মীর স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে তাদের জীবনের স্থায়িত্ব এবং আর্থিক নিরাপত্তাও প্রদান করা হয়।
আর এই দুই মডেলকে সামনে রেখেই ২০২৫ সালের এপ্রিল মাস থেকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “প্রয়োজনে আমরা দেশজুড়ে জোড়ালো আন্দোলনের পথে হাঁটবো।”
আরও পড়ুন: প্রতিটি গ্রামকে ১ কোটি টাকা দেওয়া হবে, বড় ঘোষণা করে বসলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ডিলারদের মূল অভিযোগগুলি কী কী?
ডিলাররা যে অভিযোগগুলি তুলছে তা হল, কমিশন বৃদ্ধি না হওয়া, আর্থিক সুরক্ষা না থাকা। পাশাপাশি বাজেটে রেশন ডিলারদের জন্য কোনরকম বরাদ্দ করা হচ্ছে না। ডিলারদের এই দাবি দীর্ঘদিন ধরেই কেন্দ্রের দরজায় ঘুরপাক খাচ্ছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেও তারা আশ্বাস পায়নি। তাই আন্দোলনের পথ বেঁছে নিয়েছেন।