পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একাধিক প্রকল্পের জন্য কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে পাওনা টাকার দাবি বহুদিনের। তৃণমূল কংগ্রেস সরকার বারবার অভিযোগ জানিয়ে এসেছে যে, কেন্দ্র রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ আটকে রেখেছে। সেই তালিকায় রয়েছে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা প্রকল্প, খাদ্য সরবরাহ খাতের বিভিন্ন পাওনা টাকা।
অবশেষে এবার দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর খাদ্য দপ্তরের জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে ৭৪০০ কোটি টাকা পেল রাজ্য সরকার। যদিও এখনো ৪৬০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। তবে এই অর্থ পেয়ে রাজ্য সরকার কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করল।
কেন এই টাকা পেল রাজ্য সরকার?
রাজ্য সরকার ‘সেন্ট্রাল পুল’-এর জন্য কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে চাল উৎপাদন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। এই প্রকল্পের চাল সংগ্রহের পুরো খরচ কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়ার কথা। কিন্তু বিভিন্ন অভিযোগ দেখিয়ে কেন্দ্র সেই অর্থ আটকে রেখেছিল। ফলে রাজ্য সরকারের উপর আর্থিক চাপ বেড়ে গেছিল। এবার সেই পাওনার ৭৪০০ কোটি টাকা অবশেষে পেল রাজ্য। যদিও রাজ্য সরকারের দাবি অনুযায়ী কেন্দ্র এখনো পুরোপুরি টাকা দেয়নি।
বাকি প্রকল্পের টাকার কী অবস্থা?
আমরা যদি ১০০ দিনের কাজের কথা বলি, তাহলে এই প্রকল্পের টাকা এখনো পুরোপুরি মেলেনি। রাজ্য সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে গ্রামীণ মানুষদের এই প্রকল্পের অর্থ প্রদান করেছে। আবাস যোজনা প্রকল্পে কেন্দ্রের অবদান না আসায় রাজ্য সরকার ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে নিজস্ব উদ্যোগে এই প্রকল্পের টাকা দেওয়া শুরু করেছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, পথশ্রী প্রকল্পেও বাজেট বাড়ানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর গ্রাম সড়ক যোজনার আওতায় থাকা রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ও রাজ্য নিয়েছে।
এই অর্থ এখন কী হবে?
কেন্দ্রের কাছ থেকে আপাতত যে টাকা পাওয়া গেছে সেই অর্থ দিয়ে খাদ্য সরবরাহ খাতে কিছুটা আর্থিক অভাব কমানো হবে এবং রাজ্যের কোষাগারের উপর চাপ কিছুটা হালকা করা হবে। এর পাশাপাশি কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা চালের বকেয়া টাকা মেটানো সহজ হবে।
আরও পড়ুন: BSNL-এর নতুন প্ল্যানে রাতের ঘুম উড়ল জিও, এয়ারটেলের
যদিও ৭৪০০ কোটি টাকা রাজ্য পেয়েছে। তবুও এখনো ৪৬০০ কোটি টাকা বকেয়া আছে বলে সংবাদসূত্রের খবর। কবে সেই অর্থ মিলবে তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে রাজ্য সরকার আশাবাদী যে, বাকি অর্থ পাওয়া যাবে।
রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে পাওনার একটি অংশ অবশেষে মিলেছে। তবে এখনো অন্যান্য প্রকল্পের অর্থ রেখে দিয়েছে কেন্দ্র। রাজ্য সরকার বারবার দাবি জানাচ্ছে, কেন্দ্রে যেন দ্রুত সমস্ত প্রকল্পের বকেয়া অর্থ মিটিয়ে দেয়। রাজ্যের সাধারণ মানুষ বিশেষ করে কৃষক ও রেশন গ্রাহকদের স্বার্থে এই অর্থ কতটা কাজে লাগে এখন সেটাই দেখার।