রাজ্যের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নিন্ম এবং মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য রেশনের সামগ্রী নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের প্রধান উৎস। সেই চালের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধির জন্য এবার বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যের খাদ্য দপ্তর চুক্তি করেছে এবার কানাডায় নথিভুক্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে।
পুষ্টিগণ বৃদ্ধিতে রাজ্যের পরিকল্পনা
রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের উদ্যোগে রেশনের চালের পুষ্টিগণ বৃদ্ধি করতে কারিগরি সহায়তা দেবে নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল নামের এই সংস্থা। সংস্থাটির রাজ্যে একটি বিশেষ প্রকল্প পরিচালন ইউনিট (PMU) গড়ে তুলবে। এই ইউনিটের মাধ্যমে টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট, মনিটরিং অফিসার, সফটওয়্যার ডেভেলপার, কেমিস্ট প্রভৃতি চাকরিপ্রার্থীরা কাজ করবে।
জেলা স্তরে ১৫ জন মনিটরিং অফিসার নিযুক্ত করা হবে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। তারা জেলার খাদ্য নিয়ামকের দপ্তর উপস্থিত থেকে কাজ করবে। এই ইউনিটকে প্রয়োজনীয় তথ্য এবং পরিসংখ্যান সরবরাহের জন্য ইতিমধ্যেই নির্দেশ জারি করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।
কীভাবে তৈরি হয় পুষ্টি সমৃদ্ধ চাল?
একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রেশনের চালের সঙ্গে ‘ফর্টিফায়েড রাইস কার্নেল’ (FRK) মেশানো হয়। প্রতি ১০০ কেজি সাধারণ চালের সঙ্গে ১ কেজি FRK মেশানো হয় একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে। FRK তৈরি হয় চাল গুঁড়ো করে তার সঙ্গে ফলিক অ্যাসিড, আয়রন এবং ভিটামিন যুক্ত করে। বাইরে থেকে FRK দেখতে সাধারণ চালের মতোই লাগে।
পশ্চিমবঙ্গের রাইস মিলের মালিকরা ইতিমধ্যে FRK উৎপাদনের জন্য আলাদা ইউনিট তৈরি করে ফেলেছে। প্রতিবছর খাদ্য দপ্তর টেন্ডারের মাধ্যমে FRK কিনে রাইস মিলে পাঠানো হয়। এবছর খাদ্য দপ্তর ৪৬,২০০ টন FRK কেনার জন্য টেন্ডার গঠন করেছে। প্রতি মাসে প্রায় ৩৮৫৩ টন FRK সরবরাহের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যের সরকারি কর্মীদের জন্য নবান্নের বড় ঘোষণা, ফেব্রুয়ারি মাসে একটানা ৪ দিন ছুটি
পুষ্টি উন্নত সালের প্রয়োজনীয়তা
পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় রেশনের মাধ্যমে বিশেষ পুষ্টিকর চাল সরবরাহ করা হয়। তবে সম্প্রতি এই চালের পুষ্টিগুণ নিয়ে কিছু অভিযোগ সামনে এসেছিল। এর ফলে রাজ্য সরকার চালের গুণগত মান পরীক্ষা করার জন্য উদ্যোগী হয়ে পড়েছে।
পশ্চিমবঙ্গই প্রথম রাজ্য, যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার এই পুষ্টিযুক্ত চাল সরবরাহ করার প্রকল্পটি পুরোপুরি কার্যকর করতে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টির ঘাটতি দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। রাজ্যের এই উদ্যোগ শুধুমাত্র চালের পুষ্টিগুণ বুদ্ধিতে সীমাবদ্ধ নয়, এটি রেশনের গুনমান বজায় রাখতে সাহায্য করবে।