শহর কলকাতা এবং রাজ্যের বিভিন্ন অংশে পুকুর ও জলাশয় বুজিয়ে বাড়ি তৈরি হওয়ায় বহুতল ভবনগুলি হেলে পড়ার ঘটনা এখন রাজ্য জুড়ে খবরের শিরোনামে। এই সমস্যার সমাধান করতে এবার বড় পদক্ষেপ নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
রাজ্যের পুর এবং নগরায়ন দপ্তর এই বিষয়ে একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে, যা পুকুর বা জলাশয় বুজিয়ে অবৈধ বাড়ি নির্মাণ রোধ করতে করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
কী বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে?
পুর ও নগরায়ন দপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী-
- কোথাও যদি পুকুর বা জলাশয় বুজিয়ে বাড়ি নির্মাণ করা হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট পৌরসভা দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।
- এবার থেকে কোনরকম পৌরসভা জলাশয় বুজানোর অনুমতি দিতে পারবে না।
- জমির কনভারশন সংক্রান্ত কাগজপত্র ভালো করে যাচাই করেই বাড়ি তৈরীর অনুমতি প্রদান করা হবে।
- পৌরসভার ইঞ্জিনিয়াররা নির্মাণ কাজ শুরু করে বাড়ি তদারকি করবে। স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটি সার্টিফিকেট থাকলেই পানীয় জল এবং নিকাশি সংযোগের পারমিশন দেওয়া হবে।
বিশেষ নির্দেশিকা
- কোন বাড়ির উচ্চতা যদি ১০ মিটারের বেশি হয়, (কিন্তু পাহাড়ি অঞ্চলের ৬.৫ মিটার) তাহলে নির্মাণ শুরু করার আগেই সয়েল টেস্ট করতে হবে।
- জলাশয়ের ১৫ মিটারের মধ্যে বাড়ি নির্মাণ হলে ভিত তৈরির আগেই সয়েল টেস্ট করা বাধ্যতামূলক।
কেন এই পদক্ষেপ?
সম্প্রতি কলকাতা এবং তার আশেপাশের পুকুর বুজিয়ে তৈরি হওয়া বহুতলগুলি হেলে পড়ার অনেক ছবি সামনে এসেছে। পুর ও নগরায়ন দপ্তরের একাংশের মতে পুকুর বুজিয়ে নির্মাণ করা জমির মাটি অনেক দিন নরম থাকে। সঠিকভাবে পাইলিং না করা সেই মাটি বসে যায়। যার ফলে বাড়ি ধ্বসে পড়ে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে জমি-বাড়ি কেনার নতুন নিয়ম চালু হল, এই নিয়ম না মানলেই সব শেষ হয়ে যাবে
রাজ্যের উদ্দেশ্য
রাজ্যের এই নির্দেশিকা শুধুমাত্র বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে সুরক্ষা নিশ্চিত করবে না, বরং পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জলাশয় রক্ষার কাজে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। জলাশয় বুজানোর ঘটনা রোধ করতে এবং নির্মাণের কাজ সঠিক মাত্রায় বজায় রাখতে এটি একটি বড় পদক্ষেপ হতে চলেছে।
পুকুর বা জলাশয় বুজিয়ে নির্মাণ কাজ রোধ করতে রাজ্যের এই কড়া পদক্ষেপকে বিশেষজ্ঞরা স্বাগত জানিয়েছেন। এই নির্দেশিকা অনুসরণে নির্মাণ কাজ সঠিকভাবে পরিচালিত হলে ভবিষ্যতে বড় দুর্ঘটনা থাকে মুক্তি পাওয়া যাবে।