গত কয়েক বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের বরাদ্দ বন্ধ রেখে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলে কেন্দ্র সরকার। তৃণমূল সরকারের দাবি, শুধু আবাস যোজনা প্রকল্প নয়, ১০০ দিনের কাজ এবং আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের টাকাও কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে।
এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের স্বার্থে রাজ্য নিজস্ব তহবিল থেকে এই প্রকল্পগুলি চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিশাল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করেছে।
৬৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দঃ কিভাবে পাবেন উপভোক্তারা?
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় ৬৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার থেকে ব্যাংক একাউন্টে এই টাকা সরাসরি পৌঁছে যাবে।
- প্রথম কিস্তিতে প্রতি উপভোক্তা পাবেন ৬০ হাজার টাকা।
- পরবর্তী কিস্তিতে বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু হলে আরো ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
- রাজ্য সরকার প্রতি উপভোক্তাকে মোট ১.২ লক্ষ টাকা প্রদান করবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ১১ লক্ষ উপভোক্তাকে এই প্রকল্পের আয়তায় আনা হয়েছে। প্রথম কিস্তির অর্থ মঙ্গলবার থেকেই জমা পড়বে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
দুর্নীতি রুখতে কঠোর ব্যবস্থা
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আবাস যোজনা প্রকল্পের অর্থ বন্টনের সময় দুর্নীতিমূলক কাজ বন্ধ করতে নতুন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। রাজ্যের পঞ্চায়েত সচিব পি উলগানাথন এই নির্দেশিকা প্রকাশ করেছেন এবং সকল জেলা প্রশাসনের কাছে তা পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশিকায় কি কি বলা হয়েছে?
রাজ্য সরকার প্রকাশিত এই নয় দফার নির্দেশিকায় যে সমস্ত বিবৃতিগুলো বলা হয়েছে সেগুলি হল-
- বরাদ্দকৃত অর্থ পঞ্চায়েত বা ব্লকের নির্দিষ্ট কাজে ব্যয় নিশ্চিত করতে হবে।
- প্রতিটি ব্লকে একজন সরকারি আধিকারিককে দায়িত্ব দিতে হবে টাকা পাঠানোর কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য।
- উপভোক্তাদের ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার এবং অন্যান্য তথ্য পোর্টালে আপলোড করতে হবে।
- একাউন্টে টাকা জমা পড়লে উপভোক্তাদের এসএমএসের মাধ্যমে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: PM কিষান যোজনার 19 তম কিস্তি কবে ঢুকবে? এভাবে স্ট্যাটাস চেক করুন
মুখ্যমন্ত্রীর হাতে সার্টিফিকেট বিতরণ
রাজ্য সরকার জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে কয়েকজন উপভোক্তাকে হাতে শংসাপত্র তুলে দেবেন। প্রতিটি জেলা থেকে দুজন করে উপভোক্তাকে বাছাই করা হয়েছে। বাকি উপভোক্তাদের ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি এই প্রকল্পের অর্থ প্রদান করা হবে।
প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার আশায় খুশি সমস্ত উপভোক্তা। রাজ্যের এই পদক্ষেপ বহু গরিব এবং নিন্মবিত্ত মানুষের আবাসন সমস্যার সমাধানে বড় ভূমিকা গ্রহণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় বরাদ্দ ছাড়াই নিজস্ব উদ্যোগ নিয়েই সাধারণ মানুষকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে।