ডিসেম্বর মাসের শুরুতেই রাজ্যে আলু সরবরাহ বন্ধের হুঁশিয়ারি দিল রাজ্যের প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি ও রাজ্য হিমঘর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। আগামী ৩ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন হিমঘর থেকে আলু সরবরাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে এবার রাজ্য জুড়ে আলুর সংকট দেখা দেওয়ার একটা আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ রাখতে ভিন্ন রাজ্যে রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এর ফলে হুগলির হরিপাল, তারকেশ্বর সহ বিভিন্ন অঞ্চলের হিমগড় থেকে আলু নিয়ে যাওয়া ট্র্যাকগুলি সীমান্তে আটকে দেওয়া হয়।
এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের দাবি, নিষেধাজ্ঞার কারণে আলু পচে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছেল, মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং বেআইনিভাবে জরিমানা আদায়ের অভিযোগ করছে ব্যবসায়ীরা।
আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের উদ্যোগ
রাজ্যে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় ২৩ নভেম্বর কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্নার নেতৃত্বে হরিপালে একটি সাংবাদিক বৈঠক হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, হিমঘর থেকে ২৬ টাকা প্রতি কেজি দরে আলু সরবরাহ করবে ব্যবসায়ীরা।
কিন্তু খুচরা বাজারে আলুর দাম ২৬ টাকার পরিবর্তে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত ইতিমধ্যে পৌঁছে গিয়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপ অনেকটাই বাড়ছে।
ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করলেও রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যের রপ্তানির ক্ষেত্রে কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাধা দেওয়া হয়েছে। সীমান্তে আলু বোঝায় ট্রাক আটকে দেওয়ার পাশাপাশি জরিমানাও নেওয়া হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার এবং শনিবার তারকেশ্বর আলু ব্যবসায়ী সমিতির ভবনে ২ দফা বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে যে, ডিসেম্বর মাস থেকে রাজ্যে আলু সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে।
সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা
আলু সরবরাহ বন্ধ হলে রাজ্যে তীব্র আলুর সংকট দেখা দিতে পারে। এর ফলে খুচরা বাজারে আলুর দাম আরো বাড়বে। ইতিমধ্যেই গত আগস্ট মাসে একই ধরনের ধর্মঘটের কারণে আলুর দাম আকাশ ছোঁয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ ডিসেম্বরের শুরুতেই ভোগান্তি! ফের বাড়ল রান্নার গ্যাসের দাম, নতুন দাম কত হল জেনে নিন
রাজ্যের প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, নির্ধারিত দামে আলু সরবরাহ করলেও সীমান্তে ট্র্যাক আটকে দেওয়া হচ্ছে এবং জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে তারা ধর্মঘটে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, রাজ্য সরকার যদি অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তবে এই ধর্মঘটের ফলে সাধারণ মানুষ চরম সমস্যায় পড়বেন। এখন দেখার বিষয় রাজ্য সরকার কিভাবে এই পরিস্থিতির সামাল দেয়।