NMMSS Scholarship 2024: বর্তমান সময়ে শিক্ষাক্ষেত্রে বড় একটি সমস্যা হল স্কুলছুটের হার বৃদ্ধি। অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনায় ভালো হলেও আর্থিক অনটনের কারণে মাঝপথেই পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। এই সমস্যার সমাধানে কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে চালু হওয়া ‘ন্যাশনাল মিনস-মেরিট কাম স্কলারশিপ (NMMSS)’-এর অধীনে শিক্ষার্থীকে বার্ষিক ১২,০০০ টাকা স্কলারশিপ প্রদান করা হবে। যারা মেধাবী এবং আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবার থেকে পড়াশোনা করে তারা এই স্কলারশিপের আয়তায় আসবে।
আজকের এই প্রতিবেদনে জানিয়ে দেব এখানে কারা আবেদন করতে পারবে, কিভাবে আবেদন করতে হবে, কত টাকা স্কলারশিপ দেওয়া হবে, স্কলারশিপের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা এবং শর্তাবলী, আবেদনের শেষ তারিখ ইত্যাদি বিষয়গুলি।
NMMSS স্কলারশিপের গুরুত্ব
NMMSS স্কলারশিপের মূল লক্ষ্য হল স্কুল ছুটের হার কমানো। এই স্কলারশিপ মূলত নবম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযোজ্য। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আর্থিক সহায়তা পেয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে এবং উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে।
বৃত্তির পরিমাণ
NMMSS স্কলারশিপের অধীনে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে বার্ষিক ১২০০০ টাকা স্টাইপেন্ড প্রদান করা হয়। প্রতিবছর মোট ১ লক্ষ শিক্ষার্থী এই বৃত্তি পেয়ে থাকে। এর মধ্যে ৮০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ইতিমধ্যেই চলতি অর্থবর্ষে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।
কারা আবেদন করতে পারবে?
NMMSS স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে শিক্ষার্থীর কয়েকটি যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। সেগুলি হল-
- পারিবারিক আয়- এই স্কলারশিপে আবেদন করতে হলে শিক্ষার্থীর পরিবারের বার্ষিক আয় ৩.৫ লক্ষ টাকার কম হতে হবে।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা- এই স্কলারশিপে আবেদন করার জন্য শিক্ষার্থীকে সপ্তম শ্রেণীর পরীক্ষায় কমপক্ষে ৫৫ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। তবে তপশিলি জাতি ও উপজাতির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ নম্বর পেলেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
টাকা কোথায় দেওয়া হবে?
এই স্কলারশিপের টাকা পাবলিক ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের (PFMS) মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি জমা করা হবে। অর্থাৎ, এই টাকা সরাসরি পড়ুয়াদের হাতে পৌঁছাবে যা তারা তাদের পড়াশোনার জন্য ব্যবহার করতে পারবে।
স্কলারশিপের নির্বাচন প্রক্রিয়া
এই স্কলারশিপটি পেতে গেলে শিক্ষার্থীকে দুটি পরীক্ষায় পাশ করতে হয়। প্রথম পরীক্ষাটি হলে মানসিক ক্ষমতা পরীক্ষা বা MAT। এই পরীক্ষায় ৯০ টি MCQ প্রশ্ন থাকে এবং দ্বিতীয় পরীক্ষাটি হল স্কলাস্টিক অ্যাপটিটিউড টেস্ট বা SAT। এই পরীক্ষাতে ৯০ টি প্রশ্ন থাকবে। দুটি পরীক্ষার সময় থাকবে ৯০ মিনিট করে মোট ১৮০ মিনিট। স্কল্পারশিপ পেতে হলে প্রত্যেকটি পরীক্ষায় নুন্যতম ৬০% নম্বর পেয়ে পাশ করতে হয়।
আবেদন প্রক্রিয়া
এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে প্রার্থীদের কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে-
- সর্বপ্রথম শিক্ষার্থীকে জাতীয় বৃত্তি পোটাল বা NSP-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
- রেজিস্ট্রেশনের পর ‘ন্যাশনাল মিনস-মেরিট কাম স্কলারশিপ (NMMSS)’-এর জন্য আবেদন করতে হবে।
- এই আবেদন প্রক্রিয়া যাচাই হবে দুই পর্যায়ে। প্রথমে স্কুলের স্তরে ইনস্টিটিউট অফিসার এবং পরে জেলা অফিসার দ্বারা যাচাই হবে।
আবেদন করার শেষ তারিখ
NMMSS স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের ৩১ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখের মধ্যে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ লক্ষ্মীপুজো হয়ে গেল! এবার কেউ ১৮,০০০ কেউ ১২,০০০ টাকা পাবে, আপনি পাবেন কী দেখুন
কেন এই স্কলারশিপ গুরুত্বপূর্ণ?
NMMSS স্কলারশিপ প্রকল্পটি শুধু শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেনা, বরং তাদের পড়াশোনাকে উচ্চ স্তরে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী যারা অর্থের অভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে না, তারা এই স্কলারশিপের মাধ্যমে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।
কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে এই স্কলারশিপ শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং স্কুল ছুটের হার হ্রাস করে।