পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মুহূর্তে অহরহ প্রচুর মানুষ ঘরবাড়ি বানাচ্ছেন, জমি জায়গা কিনছেন, ব্যবসার জন্য হোক বা বসবাসের জন্য অথবা অন্য কোনও কাজের জন্য জমি জায়গা কিনতেই হয় নাগরিকদের। এইসব কেনাকাটার ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হলো ঠকে যাওয়া।
মূলত কোনও মানুষ যখন জমিজমা বিক্রির জন্য প্রোমোটারের দ্বারস্থ হন, তখন জমি জমার দাম অনেকটাই বেড়ে যায়, কারণ মাঝখানে প্রোমোটাররা ঢুকে পড়ে। যে কারণে কেনা বেচার ক্ষেত্রে প্রচুর মানুষকে ঠকতে হয়। এই কারণেই এই পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তাই জমির দাম জানিয়ে দিতে রাজ্য সরকার একটি নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করল।
নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত, ধনী গরীব সকলেরই নিজস্ব বাড়ির একটা স্বপ্ন থাকে, তাই সকলেই জমি কিনে নিজের বাড়ি করার কথা ভাবে। সেই কারণে প্রত্যেকটি মানুষকেই দেখা যায় ব্যাঙ্ক থেকে প্রচুর পরিমাণে লোন করে হলেও বাড়ি করতে এবং ধার দেনা করে হলেও জমি কিনতে।
কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে জমি জমা নিয়ে দুই নম্বরী চলে, অনেক ব্যক্তি জমি কিনতে গিয়ে দালালদের ফাঁদে পড়েন, অনেক ক্ষেত্রে আবার দেখা যায় যে, ভুয়ো কাগজপত্র তৈরি করে সেখানে সই করানো হয় মানুষকে, যার ফলে অনেক মানুষ টাকা পয়সা থেকে শুরু করে আইনি প্যাঁচেও পড়ে যান।
রাজ্যের নানা জায়গা থেকে এই ধরনের নানা অভিযোগ আসতে থাকে, এমনও অভিযোগ শোনা যায় যে, যার জমি তিনি নিজেই জানেন না জমি বিক্রি হচ্ছে, আবার যে মানুষটি জমি কিনেছেন তিনি অন্য কোন মানুষকে মালিক ভেবে কিনেছেন।
অর্থাৎ জমির আসল মালিকের সম্মতি ছাড়াই জমি কিনে নিচ্ছেন যেটা একপ্রকার বেআইনি অর্থাৎ তার টাকা সম্পূর্ণ জলে যাচ্ছে। এইসব কথা ভেবেই সম্প্রতি রাজ্য সরকার একটি নতুন উদ্যোগ নিতে চলেছে।
রাজ্য সরকারের নতুন এই উদ্যোগ শুধু যে সাধারণ মানুষদের বিভিন্ন সুযোগ দেবে তা কিন্তু নয়, পাশাপাশি রাজ্য সরকারের যে রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে তাও পূরণ করে দেবে।
করোনার সময় সাধারন মানুষজনকে স্বস্তি দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার স্ট্যাম্প ডিউটি ও সার্কেল রেটে ছাড় দিয়েছিল। এই ছাড়ের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যবাসীর মধ্যে অনেকেই জমি কিনেছিলেন এবং যার ফলে রাজ্যের রাজস্ব ভান্ডার অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল।
আরো পড়ুন: সিভিক ভলেন্টিয়াররা ডেইলি এত টাকা বেশি পাবে, এখন কত টাকা বেতন?
জমির ডায়নামিক ভ্যালুয়েশন চালু করার পরিকল্পনা
গত কয়েক বছরের হিসাব দেখলে বোঝা যাচ্ছে যে, রাজ্যের কোষাগারে স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ কর আদায়ের বিপুল অংকের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। এইসবদিক বিবেচনা করে সম্প্রতি রাজ্য সরকার খুব তাড়াতাড়ি নতুন জমির ডায়নামিক ভ্যালুয়েশন চালু করার পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন।
এই পরিকল্পনার কথা একটি সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। আরো জানা যায় যে, এই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন ওয়েবসাইট ও অ্যাপ চালু হতে পারে।
উল্লেখ্য সেই ওয়েবসাইট ও অ্যাপের মাধ্যমে রাজ্যের মানুষ বাড়িতে বসেই মোবাইলে নিজেদের পছন্দের জমের দাম ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নথি জেনে নিতে পারবে আর এই ওয়েবসাইট ও অ্যাপের ফলে আশা করা যায় যে রাজ্যের মানুষ আর দালালদের দ্বারা প্রতারিত হবেন না।