পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনস্থ সকল রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের জন্য এবার আসছে সুখবর। বিগত বেশ কিছু মাস ধরে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীরা বেতন বৃদ্ধির জন্য লাগাতার আন্দোলন করে চলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের মতো রাজ্য সরকারী কর্মচারীদেরকেও যাতে ডি এ দেওয়া হয় এই নিয়ে দাবি জানিয়েছেন তারা।
এইবার তাদের এই আন্দোলনের ফলশ্রুতি হিসাবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলতি বছরে লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণা হতেই রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা এক ধাক্কায় ৪ শতাংশ বাড়িয়ে ১৪ শতাংশ করে দিয়েছিলেন যা গত মে মাস থেকে কর্মীরা পাচ্ছেন। যদিও এই বর্ধিত ডি এর পরও কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারীদের থেকে ডি এর ফারাক অনেকটাই রয়ে গেছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লোকসভা নির্বাচনের আগেই সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা (DA) বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করে ভোটের পূর্বে উপহারের ডালি বাড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে।
তবে এও শোনা যাচ্ছিলো যে, তৃতীয় বার সরকার গঠনের পর কর্মচারীদের জন্য অষ্টম বেতন কমিশন খুব শীঘ্রই বসানো হবে আর এসবের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারী কর্মীদের জন্যও সপ্তম বেতন কমিশন নিয়ে জল্পনা শোনা যাচ্ছে। তাই প্রায় পাঁচ লক্ষ সরকারি কর্মচারী সহ লক্ষাধিক অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা বেতন বৃদ্ধির আশায় দিন গুনছেন।
অন্য দিকে রাজ্য সরকারের পাশাপাশি প্রতিবেশী রাজ্য কর্নাটকের অর্থমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার কাছেও গত ১৬ ই মার্চ কর্নাটকের সরকারি কর্মীসহ অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা তাদের দাবি হিসাবে রাজ্যের সপ্তম বেতন কমিশনের রিপোর্ট জমা করেছেন।
সেই রিপোর্টে কর্মীদের বেতন ২৭.৫% বাড়ানোর দাবি করেছে তারা যদিও সে সময় সরকারি কর্মীদের আশ্বাস দেওয়া হলেও ভোট পর্ব মিটে যাওয়ার পর এখনো পর্যন্ত সরকারের তরফে বর্ধিত বেতন সম্পর্কে কোন রকম ঘোষণা করা হয় নি। মনে করা হচ্ছে,১২ ই জুন পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণবিধি বলবত থাকায় সরকারের পক্ষ থেকে বেতন সংক্রান্ত কোন মন্তব্য করা হয় নি। কিন্তু তারপরেও কেন এই সংক্রান্ত কোন মন্তব্য করা হলো না তা ভাবাচ্ছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত ১৫ জুন ডি কে শিবকুমার এই প্রসঙ্গে বলেছেন যে “সরকারি কর্মচারীদের সমস্যা সম্পর্কে আমরা সচেতন। মন্ত্রীরাও সরকারী চাকরিজীবী। আসুন আমরা সবাই সততার সাথে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করি। সরকার সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পর্যায়ক্রমে কর্মচারীদের সব দাবি পূরণ করা হবে। লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। তার প্রমাণও মিলেছে।”
তবে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার নেতৃত্বে হওয়া প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে কিন্তু এই সপ্তম বেতন কমিশন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় নি, যদিও এত তাড়াতাড়ি রাজ্য সরকারি কর্মীবৃন্দ কর্ণাটক সরকারের উপর থেকে আশা হারাচ্ছেন না, রাজ্য সরকার এই নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলেই তাদের আশা।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের সংগঠনের সভাপতি সিএস সদাকশড়ি এই নিয়ে বলেছেন যে, রাজ্য সরকার জুনের শেষ সপ্তাহে বা জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেবেন এই বিষয়ে তারা আশাবাদী।