ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি। এবার থেকে ‘ঘুষ’ নেওয়ার আগে অন্তত ১০ বার ভাববেন সরকারি কর্মীরা। আগেভাগে কোনও কাজ করে দেওয়ার জন্য, বা অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়ার জন্য, আর এক টাকাও ঘুষ নিতে পারবেন না রাজ্যের সরকারি কর্মীরা। অতি লোভে তাঁতী নষ্ট হওয়ার জোগাড় যাকে বলে।
সাধারণ মানুষ মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে চম্পট দেওয়া, বা তাঁদের কাজ না করে অস্বীকার করা, এক প্রকার ট্রেন্ডিং এখন। নেতা কর্মী সকলেই একই পথের পথিক। এবার তাঁদেরই হাত বেঁধে দিয়েছে সরকার।
পুরো ব্যাপারটা কী?
২০১৭ সালে শক্তিভেল নামে একজন পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদের একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তদন্তের সময়, পুলিশ দেখতে পায় যে অভিযুক্তরা 1992 সালের জানুয়ারি থেকে 1996 সালের ডিসেম্বরের মধ্যে অবৈধভাবে 6.7 লক্ষ টাকা জমা করেছিল।
আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা চলাকালীন তিনি মারা যান। আসামির মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীকে সহ আসামি করে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। এই মামলায় তিরুচিরাপল্লির বিশেষ আদালতও ওই মহিলাকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।
এক বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি, আদালত মৃত অভিযুক্ত শক্তিভেলের স্ত্রী দেবনায়কীকে 1000 টাকা জরিমানাও করেছে। সাজা ঘোষণার পর এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। সেখানে মামলার শুনানি করেন বিচারপতি কে কে রামকৃষ্ণনের বেঞ্চ।
বিচারক দুর্নীতি দমন আদালতের ওই নারীকে দেওয়া সাজা দেখে বলেন, তিনিও তার স্বামীর দুর্নীতির সমান অংশীদার। অর্থাৎ, স্বামী ঘুষ নিলে, স্ত্রী সমর্থন করলে স্ত্রীকেও সমান ভাবে শাস্তি পেতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ৩০ জুন লাস্ট ডেট! রেশন কার্ডে লাল কালি পড়বে, এই কাজটি না করলে
হাইকোর্ট বলেছে , একজন সরকারি চাকরিজীবীর স্ত্রীর দায়িত্ব তাঁর স্বামীকে ঘুষ নেওয়া থেকে বিরত রাখা। ঘুষ থেকে দূরে থাকাই জীবনের মূল দর্শন। কেউ ঘুষ নিলে তিনি ও তাঁর পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে। তাঁর যদি অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ ভোগ করে থাকেন তবে তাঁদের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
এদেশে দুর্নীতি অকল্পনীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্নীতি বাড়ি থেকে শুরু হয় এবং ঘরণীও যদি দুর্নীতির অংশীদার হন তবে কিছু বলার নেই। দেবনায়কীও স্বামীর অবৈধ অর্জিত অর্থ থেকে উপকৃত হয়েছিলেন এবং এখন তাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।