‘বেআইনি নিয়োগ কাদের হয়েছে, সেটা তো স্পষ্ট নয় এখনও। কোনও শিক্ষক কি নিজে থেকে তাঁর নিয়োগ বেআইনি ভাবে হয়েছে বলে মুচলেকা দেবেন?’সম্প্রতি এমনই বলেছেন এক শিক্ষা কর্তা। সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল যে স্কুলে যোগ দেওয়ার আগে মুচলেখা দিতে হবে।
কিন্তু, ভোটের পর, স্কুলে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা কাজে যোগ দিলেও তাঁরা মুচলেকা জমা দেননি এতে তো আদালতের নির্দেশ অবমাননা করা হচ্ছে, বিপদ বাড়বে না তো।
সম্প্রতি, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বাংলার স্কুল নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে 2016 সালের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করেছিল।
এসএসসি কর্তৃক 9ম, 10ম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক সহ গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-তে মোট 25,753 জন কর্মী নিয়োগকে হাইকোর্ট বেআইনি ঘোষণা করেছিল। এই নিয়োগগুলি SSLT (স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট) এর অধীনে করা হয়েছিল।
এদিকে এত শিক্ষকের চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত না মেনে সোজা হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল মাধ্যমিক শিক্ষা পরিষদ। পরিষদের যুক্তি, এত শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী হঠাৎ করে চলে গেলে স্কুল চালানো সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। পড়াশোনা কেমন হবে?
রাজ্য এবং এসএসসি এরপর হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতেই সুপ্রিম কোর্ট সবটা বুঝে আপাতত চাকরি বাতিল স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে, ভোটের পর স্কুল খুললেই কাজে যোগ দেওয়ার আগে মুচলেখা জমা দিতে বলেছিল।
শীর্ষ আদালত শর্ত দিয়েছিল, বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন চাকরিতে বহাল থাকবেন সবাই। এরপর ফাইনাল শুনানিতে যার বিরুদ্ধে বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাঁর চাকরি যাবে, এবং এতদিনের বেতনের টাকাও ফেরত দিতে হবে। স্কুলে যোগ দেওয়ার সময়, বেতন ফেরত সংক্রান্ত মুচলেকাও দিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ খাদ্য দফতর সবাইকে মেসেজ পাঠাচ্ছে, রেশন কার্ড থাকলে আপনিও পাবেন
কিন্তু শিক্ষকদের অভিযোগ, এই মুচলেকা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি স্কুল শিক্ষা দফতর প্রকাশ করেনি। তাই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কারা এই মুচলেকা দেবেন বা নেবেন, তা একেবারেই স্পষ্ট নয়। আবার যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা 2016 অধিকার মঞ্চ’-র পক্ষে একজন দাবি করেছেন যে সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারে স্পষ্ট বলা হয়েছে, যাঁদের নিয়োগ অবৈধ বলে অভিযোগ উঠেছে, কেবল তাঁরাই মুচলেকা দেবেন।
জোর করে যোগ্য প্রার্থীদের মুচলেকা দিতে বললে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও কথা দিয়েছেন তিনি। অনেকের দাবি, কে যোগ্য কে অযোগ্য, বিচার করার কেউ নেই। তাই কাজে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে আপত্তি করাও যাবে না।