রাজ্যের রেশন দুর্নীতি মামলায় বিরাট ঘটনা। ইডির দাবি এবং কলকাতা হাইকোর্টের চাপে শেষ পর্যন্ত মাথা নোয়ালো রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার জানিয়েছে, রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে রাজ্যের বিভিন্ন থানা মিলিয়ে মোট ৮৭ টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫ টিতে এফআইআর-এর চার্জশিট জমা পড়ে গিয়েছে। আরও ২০ টির তদন্ত চলছে।
তবে দুটি অভিযোগের সঙ্গে তারা অর্থাৎ রাজ্য সরকার সহমত নয় বলে জানিয়েছে। সেই দুটি অভিযোগকে ত্রুটিপূর্ণ বলে রাজ্যের তরফ থেকে দাবি করা হয়।
ঘটনা হল, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রেশন দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। এর কিছু মামলায় ইতিমধ্যেই ইডি অর্থাৎ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট যুক্ত হয়েছে। তারাই কিছুদিন আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে আবেদন জানায়, রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে রাজ্যের কোন থানায় কতগুলো এফআইআর হয়েছে তার বিস্তারিত তালিকা সরকার জমা দিক। তাহলে তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং তা দ্রুত করতে সুবিধা হবে বলেও ইডির তরফ থেকে দাবি করা হয়।
অবশ্য এনফোর্সমেন্টের ডিরেক্টরেটের একটি আবেদনের ভিত্তিতে আগেই কলকাতা হাইকোর্ট রেশন দুর্নীতির ৬ টি মামলায় রাজ্য পুলিশের তদন্তের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
আরো পড়ুনঃ নতুনরুপে দেখা যাবে রেশন দোকানগুলিকে, এবার পাবেন এইসব সরকারি সুবিধা
এই পরিস্থিতিতে বিচারপতির জয় সেনগুপ্তের এজলাসে রাজ্য সরকার তাদের তালিকা জমা দেওয়ার পর একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেন বিচারপতি। তিনি আগামী ১৭ জুনের মধ্যে ইডিকে এই বিষয়ে তাদের মতামত জানাতে বলেন। ঐদিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
উল্লেখ্য, রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে ইতিমধ্যেই জেলে গিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এই দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়েই সন্দেশখালির ঘটনার সূত্রপাত। তারপর সেখানকার ‘বেতাজ বাদশা’ তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ শাহাজানও জেলে যান।
আরো পড়ুনঃ রেশন কার্ড বাতিল হলেই ঝামেলা, তবে এই কাজটি করলে আর চিন্তা নেই
ডিরেক্টরেট ইতিমধ্যেই আদালতে দাবি করেছে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক রেশন দুর্নীতি কাণ্ডের আগাপাশতলা জানতেন। তিনি জেনেও মন্ত্রী হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করেননি। দুর্নীতি থামানোর পরিবর্তে নিজেই চালকল মালিক, রেশন ডিলারদের একাংশকে নিয়ে দুর্নীতির একটি চক্র গড়ে তুলেছিলেন। যার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করা হয়েছে।