সপ্তাহখানেক হল বাংলার ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। যদিও সাময়িক স্বস্তি দিয়ে সর্বোচ্চ আদালত একদিন আগেই জানিয়েছে শর্তসাপেক্ষে জুলাই মাস পর্যন্ত এসএসসির ২০১৬-এর প্যানেলের ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্তরা চাকরি করতে পারবেন।
ফলে সাময়িক স্বস্তি এলেও রাজ্যের এই হাজার হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর মাথার উপর চাকরি বাতিলের খাঁড়া যে ঝুলছে তা বলাই যায়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরি বাতিলের ঘটনা ঘটল।
এবারের ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাজ্যের তুলনায় নবীন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। আসানসোলে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি উচ্চ পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়ম ঘটেছে বলে কলকাতা হাইকোর্ট তাদের রায়ে জানিয়েছে। এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলার রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি কঠোর নির্দেশ দেন।
আরো পড়ুনঃ গ্রাম পঞ্চায়েতে 6652 শূন্যপদে চাকরি, আবেদন কবে শুরু হবে?
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৯ সালে। ওই বছর কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্ল্যানিং অফিসার পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে শর্ত হিসেবে বলা হয়েছিল, ৫৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশের পাশাপাশি ১০ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
প্রাথমিকভাবে ৫০ জন এই পদের জন্য আবেদন করেন। তাঁদের মধ্যে থেকে ১০ জনের একটি শর্ট লিস্ট করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারপর শর্ট লিস্ট হওয়া চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হয়। মৌখিক সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে মহেশ্বর মালোদাস’কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্ল্যানিং অফিসার পদে তারা নিয়োগ করেন।
কিন্তু এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে শর্ট লিস্টে থাকা অন্য দুই চাকরিপ্রার্থী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ছিল না। যোগ্যদের বাদ দিয়ে অযোগ্যকে নিয়োগ করা হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ ATM কার্ড ভুলে গেলেও সমস্যা নেই, আধার কার্ড দিয়েই এইভাবে তুলুন টাকা
বিচারপতি কৌশিক চন্দ বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯ সালের যে বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে সেই প্যানেলটাই বাতিল করে দেন। সেইসঙ্গে এই পদে চাকরিরত মহেশ্বর মালোদাসের নিয়োগকেও বাতিল করেন বিচারপতি। তিনি জানান নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তির যোগ্যতা নেই ওই পদে চাকরি করার।