বর্তমানে হকারদের উচ্ছেদ নিয়ে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়ে আছে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন গোটা রাজ্য জুড়ে হকারদের বেআইনি দোকানের উচ্ছেদের নির্দেশ দেন, তারপর স্বাভাবিক ভাবেই একটা টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
গোটা রাজ্য রাজনীতি রীতিমতো সরগরম হয়ে ওঠে। বৃহস্পতিবার হকাররা একটি আন্দোলন করেন, যেই আন্দোলনের তীব্রতা দেখে মুখ্যমন্ত্রী উচ্ছেদ থেকে সরে আসার জন্য এক মাসের সময় দেন।
এখন হকারদের নিয়ে একটি প্রকল্পের কথা বারবার আলোচিত হচ্ছে। গতবছর যে প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে হকারদের জন্য চালু করা হয়েছে, এই প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে রাজ্যের পৌরসভা এলাকায় ব্যবসা করা হকারদের রাজ্য সরকার ৮০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়।
যে সকল হকাররা পৌরসভা এলাকার ও পৌরসভা এলাকায় ব্যবসা করেন, তাদের সেইসব প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হয়, এছাড়া গ্রামীন এলাকার হকার হলেও তারা এই সুবিধা পাবেন যদি তারা পৌরসভা এলাকায় ব্যবসা করেন।
এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে হলে গত বছরের নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী, পৌরসভায় আবেদন জানাতে হতো। এই প্রকল্পে হকারদের ৮০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে। পুরো টাকা তিন দফায় এই টাকা দেওয়া হয়, প্রথমে ১০ হাজার টাকা, সেই টাকা শোধ করলে ২০ হাজার টাকা, ২০ হাজার টাকা শোধ করার জন্য এক বছর সময় পাওয়া যাবে আর সেই টাকা শোধ হলেই ৫০ হাজার টাকা পাওয়ার যোগ্য হবেন হকাররা।
এখন বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায় দুর্গাপুজো, কালী পুজো, ষষ্ঠী বা যে কোনো বড় উৎসব পার্বণের সময় বড় বড় সব ব্যবসায়ীরা নিজেদের সঞ্চিত অর্থে বিনিয়োগ করে আরো প্রচুর পরিমাণে ব্যবসার সামগ্রী কিনে, ব্যবসা বড় করবার চেষ্টা করেন।
কিন্তু যারা ছোট ব্যবসায়ী অর্থাৎ হকারদের মধ্যে ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা বাড়ানোর ইচ্ছা থাকলেও টাকার অভাবে করতে পারে না, এই কারণেই ২০২৩ এর দুর্গা পুজোর আগে রাজ্য সরকার একটি প্রকল্প চালু করেছিলো, যার দ্বারা হাজার হাজার হকাররা উপকৃত হয়ে ছিলো।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে এই প্রকল্প ঘোষণার পর এখনও এক বছর সময় পার হয় নি, সুতরাং এই প্রকল্পের টাকা পাওয়া ও টাকা শোধ করার সময় এখনও আছে। এ ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বছর গত বছরের মত হকারদের জন্য এই ধরনের প্রকল্প ঘোষণা করতে পারেন বলে অথবা প্রকল্পের সুবিধা বাড়িয়ে দিতে পারেন বলে ও শোনা যাচ্ছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে হকারদের এই আন্দোলন এত উত্তাল হয়েছে, এই আন্দোলন নিয়ে যখন সরকারের মাথাব্যথা রয়েছে তাই আগামী দিনে মুখ্যমন্ত্রী কী সিদ্ধান্ত নেন সেটার অপেক্ষায় সকল হকাররা বসে আছেন।