রাজ্য এবং কেন্দ্রের মধ্যে অনুদান সংক্রান্ত টানাপোড়েন দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছিল। একাধিক সরকারি প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। তবে এবার এক বড়সড় পরিবর্তন দেখা গেল। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রের প্রস্তাবে রাজি হল রাজ্য সরকার। আর তার ফলস্বরূপ বাংলায় তৈরি হতে চলেছে নতুন চারটি ESI হাসপাতাল (ESI hospitals।
এই সিদ্ধান্তে উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দার্জিলিং-এর মত জেলাগুলিতে মানুষ প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে রাজ্য সরকার এবং শীঘ্রই এই প্রকল্পের কাজ হবে।
রাজ্যের সম্মতিতে দ্রুত বাস্তবায়ণ
অনেকদিন আগেই কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের তরফ থেকে রাজ্যকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এতদিন বিষয়টি ঝুলে ছিল। এবার রাজ্য সরকার প্রস্তাবে সাই দিয়েছে এবং স্বাস্থ্যপরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এই নতুন হাসপাতালগুলির মাধ্যমে রাজ্যের বহু মানুষ উন্নতমানের চিকিৎসা সুবিধা পাবেন এবং শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরিসেবা আরও উন্নত হবে।
কোথায় কোথায় হবে নতুন ESI হাসপাতাল?
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, চারটি অত্যাধুনিক ESI হাসপাতাল তৈরি করা হবে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার শ্যামনগরে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুরে, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ায় এবং দার্জিলিং জেলায়। এই হাসপাতালগুলিতে অত্যাধুনিক পরিকাঠামো এবং উচ্চমানের চিকিৎসা সুবিধা পাওয়া যাবে।
দার্জিলিং এবং হলদিয়ায় ১০০ শয্যার হাসপাতাল
বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, পাহাড়ি এলাকায় চিকিৎসার পরিকাঠামো সবসময় একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। তাই দার্জিলিং-এ একটি ১০০ শয্যার হাসপাতাল চালু হলে হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবে। একইভাবে হলদিয়াতে ১০০ শয্যার একটি হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে। শিল্পাঞ্চল হওয়ায় এখানে অনেক শ্রমিক কাজ করেন। ফলে এই হাসপাতালে তাদের উন্নত চিকিৎসা পাওয়া যাবে।
এছাড়া শ্যামনগরে এবং খড়্গপুরের হাসপাতালগুলোতেও সাধারণ মানুষের জন্য উন্নত পরিকাঠামো ব্যবস্থা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।
রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নতুন মাত্রা
এতদিন পর্যন্ত সারা দেশে মোটে ১৬০টি ESI হাসপাতাল ছিল। এর মধ্যে আটটি সাধারণ হাসপাতাল এবং দুটি দন্ত চিকিৎসার হাসপাতাল রয়েছে। এবার নতুন চারটি হাসপাতাল যুক্ত হওয়ায় বাংলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নত হবে।
বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গ এবং পাহাড়ি এলাকায় রোগীদের জন্য অত্যাধুনিক পরিষেবা নিশ্চিত হবে। হাসপাতালগুলোতে প্যারামেডিকেল কোর্স চালু করার পরিকল্পনাও রয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ হবে, অন্যদিকে কর্মসংস্থানের নতুন দিক খুলে যাবে।
আরও পড়ুন: ব্যাংক জালিয়াতিতে উড়ে গেল ১০৭ কোটি টাকা! আপনার টাকা সুরক্ষিত তো?
কী কী সুবিধা পাবেন রোগীরা?
এই নতুন হাসপাতালগুলোতে সে সুবিধাগুলি মিলবে সেগুলি হল-
- ফ্রি চিকিৎসা এবং ওষুধ,
- অত্যাধুনিক ডায়াগনস্টিক সুবিধা,
- বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ,
- অপারেশন থিয়েটার এবং ইমারজেন্সি পরিষেবা,
- শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের জন্য বিশেষ সুবিধা।
রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকারের মধ্যে অনেক বিতর্ক থাকলেও এই চারটি হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাংলার মানুষদের জন্য খুবই উপকৃত হতে চলেছে। বিশেষত দক্ষিণবঙ্গ এবং পাহাড়ি এলাকার মানুষরা খুব সহজে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা নিতে পারবেন।