পশ্চিমবঙ্গের আবাস যোজনা তালিকা থেকে সম্প্রতি প্রায় ৪ লক্ষ উপভোক্তার নাম বাদ পড়েছে। এর ফলে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এমন অপ্রত্যাশিত ছাঁটাইয়ের ফলে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রশাসনের মধ্যেও তৈরি হয়েছে সংশয়।
সামগ্রিকভাবে মোট ২২ শতাংশের বেশি উপভোক্তার নাম এই তালিকা থেকে বাদ পড়ায় অনেকেই তালিকায় নিজেদের নাম নিয়ে সন্ধিহান প্রকাশ করেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য প্রশাসন ১৪ নভেম্বরের মধ্যে তালিকার পুনরায় যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছে। এতে উপভোক্তারা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে না।
ছাঁটাইয়ের হার এবং পরিসংখ্যান
সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের তথ্যে প্রায় ৪ লক্ষ ১৮ হাজার উপভোক্তার নাম বাদ পড়েছে বাংলা আবাস যোজনা তালিকা থেকে। এটি মোট উপভোক্তার ২২ শতাংশ।
নদীয়া এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ছাঁটাইয়ের হার সবচেয়ে বেশি। এই দুই জেলায় যথাক্রমে ৫২ হাজার এবং ৩৭ হাজার উপভোক্তার নাম বাদ পড়েছে। এছাড়া মালদহে ৩৫ শতাংশ, হাওড়ায় ৩২ শতাংশ এবং মুর্শিদাবাদে ৩২ শতাংশ উপভোক্তার নাম ছাঁটাই হয়েছে আবাস যোজনা তালিকা থেকে।
তালিকা পুনরায় যাচাই
বাংলা আবাস যোজনা তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ার খবর এখনো অনেক উপভোক্তার কাছে পৌঁছায়নি। ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত পুনরায় যাচাইয়ের জন্য উপভোক্তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। প্রথম ধাপে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে যাচাইয়ের কাজ চলছে। এরপর তালিকায় ১০ শতাংশ উপভোক্তার তথ্য পঞ্চায়েত দপ্তরের মাধ্যমে পুনরায় যাচাই করা হবে, যাতে কোনো রকম ভুল না হয় এবং কেউ এই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত না হয়।
পুনরায় নাম নথিভুক্তি
রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে ছাঁটাই হওয়ার তালিকায় কিছু উপভোক্তার নাম পুনরায় অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, প্রয়োজন হলে রাজ্য সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অর্থ সরবরাহ করবে।
যদিও এই খাতে আলাদা কোন বাজেট বরাদ্দ নেই। তবে সম্প্রতি কেন্দ্র থেকে জিএসটি ক্ষতিপূরণের অর্থ পাওয়ার পর এই বিষয়ে কিছুটা শিথিলতা এসেছে। তবে এর ফলে রাজ্যের অর্থ তহবিলের কিছুটা ঘাটতি দেখা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: কৃষক বন্ধুর টাকা ১ বার দিয়েছে, এবছর আবার ঠিক এই সময়ে ঢুকবে
নতুন নিয়মাবলী ও যাচাই নির্দেশিকা
অক্টোবর মাসের শেষের দিকে পাঠানো নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যেসব পঞ্চায়েতে বেশি পরিমাণে ছাঁটাই হয়েছে সেগুলি পুনরায় যাচাই করা হবে। আগের নিয়ম অনুযায়ী ইটের দেওয়াল থাকলে এই তালিকা থেকে নাম বাদ পড়তো।
কিন্তু নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী ঘরে ইটের দেওয়াল থাকলেও যদি পাকা ছাদ না থাকে তাহলে সেই উপভোক্তার নাম তালিকায় পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। এর ফলে এই প্রকল্প থেকে আর কেউ বঞ্চিত হবে না।