পশ্চিমবঙ্গ সরকার সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রতিনিয়ত নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এই রাজ্যে তেরো থেকে ত্রিশ সকলের জন্যই রয়েছে বিভিন্ন রকম প্রকল্প। এবার আনন্দধারা প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।
কেন বরাদ্দ করা হল ১০ কোটি টাকা?
আনন্দধারা প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোকে বেশি পরিমাণে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা। এক রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে প্রায় ১২ লক্ষ ১ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। এই গোষ্ঠীগুলির সাথে প্রায় ১.২১ কোটি পরিবার সরাসরি যুক্ত রয়েছে।
গ্রামীন এলাকায় মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে তুলতে এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডোকরা, মাদুর, কাঁথা সেলাই, হোমমেড চকলেট তৈরি, স্কুল ইউনিফর্ম সেলাই-এর মত কাজে নিযুক্ত এই গোষ্ঠীগুলি রাজ্যের অর্থনৈতিক পরিকাঠামাকে আরো শক্তিশালী করে তুলছে।
মেলার মাধ্যমে বিক্রয় বৃদ্ধি
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পণ্য বিক্রয়ের জন্য রাজ্যের তরফে একাধিক মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সম্প্রতি দার্জিলিংয়ে সরস মেলা শুরু করা হয়েছে। আগামী বছর কলকাতায় দুটি বড় বড় মেলার আয়োজন করা হবে। দেশবন্ধু পার্কে ১০ই জানুয়ারি এবং পার্ক সার্কাস ময়দানে ২৪শে জানুয়ারি এই মেলা শুরু হবে।
২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত ২১ টি মেলার মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি প্রায় ১২.২১ কোটি টাকার পণ্য বিক্রয় করেছিল। শুধু তাই নয়, রাজ্যের পাশাপাশি বিহার, ঝাড়খন্ড, তেলেঙ্গানা, দিল্লি সহ বিভিন্ন রাজ্যের মেলায় অংশগ্রহণ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি।
ই-বিক্রয় কেন্দ্রের সূচনা
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর পণ্যগুলিকে ডিজিটাল প্লাটফর্মে তুলে আনতে রাজ্য সরকার ই-বিক্রয় কেন্দ্র চালু করেছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে মহিলারা ঘরে বসেই তাদের তৈরি পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবে।
স্কুল ড্রেস তৈরিতে গোষ্ঠীর ভূমিকা
প্রতিবছর রাজ্যের প্রায় ১ কোটি ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্যে স্কুল ইউনিফর্ম বিতরণ করা হয়ে থাকে এবং এই ইউনিফর্ম সেলাইয়ের দায়িত্ব পালন করে রাজ্যের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা।
আরও পড়ুন: ঘরের টাকা পেতে কীভাবে আবেদন করতে হবে? এইসব কাগজপত্র থাকলেই হবে
পশ্চিমবঙ্গের স্বনির্ভর গোষ্ঠী
তৃণমূল কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির প্রসার আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ সারা দেশে প্রথম স্থানে রয়েছে। আনন্দধারা প্রকল্পে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ এই উদ্যোগকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে মনে করছে প্রশাসন।
রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ স্বনির্ভর মহিলাদের আরও আর্থিক সুরক্ষা প্রদান করবে। পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিতে নতুন দিশা দেখাবে।