চার মাস পেরিয়ে গেলেও সুপ্রিম কোর্টে মহার্ঘভাতা (DA) মামলার শুনানি হয়নি। আজ নয়, কাল নয় করে পর পর পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবারও সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তাও স্থগিত করা হয়েছে।
আইনজীবী ফিরদৌস শামীম আদালতকে বলেন, দুর্গাপূজার আগে সরকারি কর্মচারীরা যাতে ডিএ পান তা নিশ্চিত করতে হবে। এই বিষয়ে, রাজ্য সরকারের তরফে অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন যে এই বিষয়ে দীর্ঘ শুনানির প্রয়োজন রয়েছে।
বিচারপতি হৃষিকেশ রায় ও বিচারপতি এসভিএন ভাট্টির বেঞ্চ জানিয়েছে, পরে এই বিষয়ে শুনানি হবে। শুনানির তারিখ পরে ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্ট। এইভাবে অনিশ্চিত দিনের জন্য শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার বিষয়টি একটু অদ্ভুত, চিন্তায় অনেকেই। তাহলে কি এইভাবেই DA মামলায় জিতে গেল রাজ্য? উঠছে হতাশার প্রশ্ন।
2022 সালে, 18 নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টে প্রথমবার ডিএ মামলার শুনানি হয়েছিল। মামলার শেষ শুনানি হয় গত বছরের 1 ডিসেম্বর। একই বছরের 3 নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলেছিল যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ নিয়ে আরও বিশদ শুনানির প্রয়োজন রয়েছে। এরপর সময়ের স্বল্পতার কারণে আর শুনানি করা যায়নি। ডিএ মামলার সঙ্গে যুক্ত আইনজীবীদের একাংশ মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আরও সময় লাগতে পারে।
জানা গিয়েছে, এই বছরে এই শেষ। এই DA মামলা নিয়ে মাথা ঘামাবে না সুপ্রিম কোর্ট। দুর্গাপুজোর আগে কোনও বড় হারে DA পাবেন না। কারণ পরবর্তী শুনানির সময় চেয়ে নেওয়া হয়েছে আগামী বছরের 7ই জানুয়ারি পর্যন্ত।
কীভাবে এই DA মামলার সূত্রপাত?
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একটি অংশ কেন্দ্রীয় হার এবং মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ বকেয়া দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিল। 20 মে, 2022-এ, হাইকোর্ট রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল যে কেন্দ্রের মতো 31 শতাংশ হারে রাজ্য কর্মচারীদের ডিএ দিতে হবে।
হাইকোর্ট এরপরই রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন, একতা মঞ্চ ও সরকারি কর্মচারী পরিষদের পক্ষে রায় দিয়েছিল। এরপরেই এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে যায় 3 নভেম্বর, 2022-এ। সেই তারিখেই এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। বাকিটা ইতিহাস।
আরো পড়ুনঃ কারেন্ট বিলে মিলবে বিরাট ছাড়! তবে এত টাকা পর্যন্ত
রাজ্য সরকারের পক্ষে আর্থিক বোঝা বহন করা কঠিন
28 নভেম্বর প্রথম শুনানি হয়েছিল। রাজ্যের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেছিলেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তাঁর প্রশ্ন ছিল, হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডিএ দিতে হলে প্রায় 41 হাজার 770 কোটি টাকা খরচ হবে। বর্তমানে রাজ্য সরকারের পক্ষে এই আর্থিক বোঝা বহন করা কঠিন।
অন্যদিকে, মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিএ-তে বেশ কিছু বৃদ্ধির ঘোষণা কিন্তু করেইছেন। বর্তমানে রাজ্য সরকারি কর্মীরা ষষ্ঠ বেতন কমিশনের অধীনে, 14% হারে DA পাচ্ছেন।