সরকারি চাকরিজীবীরা একটা সুবিধা পেয়ে থাকেন। অনেকেই কর্মজীবনে সেইভাবে ছুটি নেন না। বদলে তা জমিয়ে রেখে অবসর গ্রহণের সময় সরকারকেই সেই ছুটি বিক্রি করে দেন। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় লিভ এনক্যাশম্যান্ট। এই ছুটি বিক্রি করে টাকা পাওয়ার প্রক্রিয়াকে এবার চাকরিজীবীদের অধিকার বলে রায় দিল হাইকোর্ট। ফলে মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারের।
গোটা ঘটনাটা বাংলার নয়। মুম্বই হাইকোর্ট সম্প্রতি একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মীদের চাকরি বিক্রি নিয়ে এই রায় দিয়েছে। সরকারি মালিকানাধীন বিদর্ভ কোঙ্কন গ্রামীণ ব্যাঙ্কের চাকরি থেকে দু’জন কর্মী ২০১৫ সালে অবসর নিয়েছিলেন। তাঁদের অন্যান্য যাবতীয় প্রাপ্য এবং ভাল কাজের স্বীকৃতির সার্টিফিকেট কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু জমে থাকা ছুটি ওই দুই কর্মীর থেকে কিনতে চায়নি সরকার। সরকার তরফ থেকে জানানো হয়, এই বিষয়টি বাধ্যতামূলক নয়। এরপরই মুম্বই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন দত্তারাম সাওয়ান্ত ও সীমা সাওয়ান্ত।
ওই দুই অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীর মামলার রায় দিতে গিয়ে মুম্বই হাইকোর্টের বিচারপতি নিতীন জমাদার এবং বিচারপতি এমএম সত্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, লিভ এনক্যাশমেন্ট সরকারি কর্মীদের অধিকার। এই অধিকার অস্বীকার করার অর্থ হল সংবিধানের ৩০০-এ ধারা লংঘন করা। ওই দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, দুই সরকারি কর্মীর জমে থাকা ছুটি অবশ্যই বিদর্ভ কোঙ্কন গ্রামীণ ব্যাঙ্ককে কিনে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ OBC সার্টিফিকেট কী? ওবিসি থাকলে কী কী সুবিধা পাওয়া যায়?
পাশাপাশি হাইকোর্ট বলে, অগ্রিম বৈধ সংবিধিবদ্ধ বিধি থাকলে তবেই একমাত্র সরকার এইসব ক্ষেত্রে অন্যরকম সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা ছিল না। তাই ওই দুই সরকারি কর্মী তাদের জমে থাকা ছুটির বিক্রি করার অধিকারী।
উল্লেখ্য, দত্তারাম সাওয়ান্ত ও সীমা সাওয়ান্ত ১৯৮৪ সালে বিদর্ভ কোঙ্কন গ্রামীণ ব্যাঙ্কে যোগ দিয়েছিলেন। দত্তারাম ছিলেন ব্যাঙ্কের ম্যানেজার। আর সীমা ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার পদে চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু ২০১৫ সালে তাঁরা চাকরি থেকে অবসর নিতেই এই নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। মুম্বই হাইকোর্টের এই রায় শুধু ওই দুই সরকারি কর্মী নয়, একই পরিস্থিতিতে থাকা বাকিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।