নতুন বছর শুরুর আগেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের মহিলাদের জন্য একাধিক জনকল্যান মূলক প্রকল্প ঘোষণা করলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন লক্ষ্মীর ভান্ডার, বিধবা ভাতা এবং বার্ধক্য ভাতা সহ একাধিক প্রকল্পে উপভোক্তাদের সংখ্যা এবং বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
লক্ষীর ভান্ডারে যুক্ত হল আরো ৫ লক্ষ মহিলা
রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় প্রকল্প লক্ষ্মীর ভান্ডারে এবার নতুন করে আরো ৫ লক্ষ মহিলাকে উপভোক্তা হিসেবে নির্বাচিত করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ডিসেম্বর মাস থেকে এই নতুন উপভোক্তাদের ব্যাংক একাউন্টে ভাতার টাকা জমা পড়তে শুরু করবে। ফলে এখন লক্ষ্মীর ভান্ডারের আওতায় মোট উপভোক্তার সংখ্যা ২ কোটি ২১ লক্ষ।
এর আগে লক্ষীর ভান্ডারে অনুদানের জন্য ৪৮ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এবার এই প্রকল্পের বরাত বাড়িয়ে ৫৫ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের বার্ষিক খরচ হবে প্রায় ৬২৫ কোটি ২০ লক্ষ টাকা।
বার্ধক্য ভাতা এখন আরও সহজে
এবার থেকে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের উপভোক্তারা নির্দিষ্ট বয়স সীমা পার করলে তাদেরকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্ধক্য ভাতা প্রকল্পে আনা হবে। এই প্রকল্পের জন্য আলাদা করে কোনো আবেদন করার প্রয়োজন হবে না। উপভোক্তাদের বয়স ৬০ বছর পেরালেই তাদেরকে সরাসরি বার্ধক্য ভাতায় যুক্ত করা হবে।
বিধবা ভাতায় নতুন সুযোগ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানান, নতুন করে ৪৩ হাজার ৯০০ জনকে বিধবা ভাতার আয়তায় আনা হয়েছে। ডিসেম্বর মাস থেকে তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এই ভাতার টাকা জমা পড়তে শুরু করবে। নতুন উপভোক্তা যুক্ত হওয়ার পরে বিধবা ভাতা প্রকল্পের সুবিধা পাবেন এখন থেকে মোট ২০ লক্ষ ৭৫ হাজার মহিলা।
আবাস যোজনা প্রকল্পে আরও সুবিধা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের অর্থে ১২ লক্ষ মানুষের জন্য বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। আগামী ১৫ থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যেই আবাস যোজনা প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা সরাসরি উপভোক্তাদের ব্যাংক একাউন্টে দেওয়া হবে। অন্যান্য উপভোক্তারাও খুব শীঘ্রই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে সবার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকবে, ৯৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার
রাজ্যের মহিলাদের আর্থিক সুরক্ষা ও সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই উদ্যোগগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় “আমাদের লক্ষ্য রাজ্যের প্রতিটি মহিলা ও প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়ানো।” এই প্রকল্পগুলি শুধু মহিলাদের ক্ষমতাকেই নয় বরং রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা পালন করবে।